আমাদের লক্ষ্য কি লাভজনক? - কোরআনের আয়াত

আমাদের জীবনের লক্ষ্য কি? এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, আমরা সবাই জীবনী সফলতা পেতে চাই, আর সফলতা পেতে হলে সঠিক লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে। কিভাবে সঠিক লক্ষ্য নির্ধারণ করবো বা বুঝব এটাই সঠিক?

image

সূচিপত্র: আমাদের লক্ষ্য কি লাভজনক?

(নিচের যে অংশ থেকে পড়তে চান ক্লিক করুন)

আমাদের লক্ষ্য কেমন হওয়া উচিত সে সম্পর্কে কোরআনের আয়াত

আল্লাহ কুরআনে বলেন, সূরা আল ইমরান আয়াত নং ১৬০, যদি আল্লাহ তোমাদের সাহায্য করেন, তবে কেউ তোমাদের উপর জয়ী হতে পারবেনা আর যদি তিনি তোমাদের পরিত্যাগ করেন তবে এমন কে আছে, যে এরপর তোমাদের সাহায্য করবে? এবং মুমিনদের কে আল্লাহর উপর ভরসা থাকা চাই।

اِنۡ يَّنۡصُرۡكُمُ اللّٰهُ فَلَا غَالِبَ لَـكُمۡ​ۚ وَاِنۡ يَّخۡذُلۡكُمۡ فَمَنۡ ذَا الَّذِىۡ يَنۡصُرُكُمۡ مِّنۡۢ بَعۡدِهٖ ​ؕ وَعَلَى اللّٰهِ فَلۡيَتَوَكَّلِ الۡمُؤۡمِنُوۡ (১৬০)

আল্লাহ কুরআনে আরো বলেন, সূরা আনকাবুত আয়াত নং ৬৯, এবং যারা আমার পথে প্রচেষ্টা চালায় অবশ্যই আমি তাদেরকে আপন রাস্তা দেখাবো; এবং নিশ্চয় আল্লাহ সৎকর্মপরায়ণদের সাথে আছেন।

وَالَّذِيۡنَ جَاهَدُوۡا فِيۡنَا لَنَهۡدِيَنَّهُمۡ سُبُلَنَا ​ؕ وَاِنَّ اللّٰهَ لَمَعَ الۡمُحۡسِنِيۡنَ (৬৯)

এছাড়াও সূরা নাহল আল্লাহ বলেন আয়াত নং ৪৩, এবং আমি আপনার পূর্বের প্রেরণ করিনি, কিন্তু পুরুষকে, যাদের প্রতি আমি ওহী করতাম। সুতরাং হে লোকেরা ! জ্ঞানীদের কে জিজ্ঞাস করো যদি তোমাদের জ্ঞান না থাকে;

وَمَاۤ اَرۡسَلۡنَا مِنۡ قَبۡلِكَ اِلَّا رِجَالًا نُّوۡحِىۡۤ اِلَيۡهِمۡ​ فَسۡـــَٔلُوۡۤا اَهۡلَ الذِّكۡرِ اِنۡ كُنۡتُمۡ لَا تَعۡلَمُوۡنَۙ‏ (৪৩)

আল্লাহ কুরআনে বলেন সূরা বাকারা আয়াত নং ২০১ আর কেউ এমন বলে, হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে দুনিয়ায় কল্যাণ দাও এবং আমাদেরকে আখিরাতে কল্যাণ দাও আর আমাদেরকে দোযখের আযাব থেকে রক্ষা করে

وَمِنۡهُمۡ مَّنۡ يَّقُوۡلُ رَبَّنَآ اٰتِنَا فِى الدُّنۡيَا حَسَنَةً وَّفِى الۡاٰخِرَةِ حَسَنَةً وَّ قِنَا عَذَابَ النَّارِ‏ (২০১)

কোরআন পড়া শিখুনসকল ভাষায় অর্থসহ কোরআন পড়ুন

ডক্টর জাকির নায়েক বলেন আমার কাছে সবচেয়ে সেরা লক্ষ্য (I S L A M I C) ১ I. ইসলামিক, ২ S. লক্ষ্য নির্দিষ্ট, ৩ L. লাভজনক, ৪ A. তীক্ষ্ণ, ৫ M. পরিমাপ, ৬ I. নিয়ত, ৭ C. ধারাবাহিক।

আপনার লক্ষ্য ইসলামিক হতে হবে

আপনার লক্ষ্য ইসলামিক হতে হবে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর শিক্ষা অনুযায়ী হতে হবে আপনার গন্তব্য কোরআন এবং সর্বশেষ পয়গম্বর নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লা বার্তাবাহক এর হাদীস অনুযায়ী হতে হবে।

লক্ষ্য নির্দিষ্ট (স্পষ্ট হবে, অস্পষ্ট হবে না)

লক্ষ্য নির্দিষ্ট হতে হবে অস্পষ্ট হলে হবে না যেমন: একটা উদাহরণ দেই একজন শিক্ষক ছাত্রদেরকে ধনু বিদ্যা শিক্ষা দিচ্ছেন স্যার বললেন আমি না বললে কেউ তীর ছাড়বে না।

স্যার প্রথম ছাত্রকে বললেন তুমি কি দেখতে পাচ্ছো সে বলল বন গাছ ডাল আর একটা পাখি দেখতে পাচ্ছি ,দ্বিতীয় ছাত্রকে জিজ্ঞেস করল সে বলল একটি গাছ ডাল আর একটিপাখি দেখতে পাচ্ছি, তৃতীয় ছাত্র কে বলল তৃতীয় ছাত্র বলল গাছে একটি পাখি দেখতে পাচ্ছি , চতুর্থ ছাত্র বলল স্যার আমি পাখির চোখ দেখতে পাচ্ছি আর অন্য কিছুই দেখতে পাচ্ছি না।

স্যার তীর ছুড়তে বললেন তীর ছোড়া হল ঠিক চতুর্থ ছাত্রের তীর টি পাখিটির চোখে লাগলো। আশা করি আপনারা বুঝাতে পেরেছন।

লাভজনক (ইহকাল + পরকাল)

এটা লাভজনক হতে হবে প্রথমত লাভজনক হতে পারে পরকালে আখেরাতে আবার এটা লাভজনক হতে পারে সমানভাবেই পৃথিবীতে তবে গুরুত্ব হচ্ছে আখিরাত আপনাদেরকে বলেছি (সূরা বাকারা আয়াত নং ২০১) টি এমন যেন না হয় দুনিয়ার লাভ আখিরাতকে নষ্ট করে দেবে।

তীক্ষ্ণ (দুইটি সংক্ষিপ্ত উদাহরণ)

লক্ষ সুতীক্ষ্ণ যথাযথ হতে হবে সঠিক হতে হবে। এমনটা না সেই বৃদ্ধ বুড়ির মতো যে নিজে সুতা দিয়ে পোশাক তৈরি করে আবার একটা একটা করে খুলে ফেলে দেয়। কিংবা এমন না যে একটি মানুষ রাস্তায় চলতেছে কিন্তু সে কোথায় যাবে সে নিজেও জানে।

পরিমাপ বা সীমারেখা

লক্ষ্যটা পরিমাপ হতে হবে, নির্দিষ্ট হতে হবে, যথাযথ হতে হবে, হওয়ার পর এর একটা সীমা থাকতে হবে। ধরুন আপনি একটি পাঁচতলা বিল্ডিং বানাবেন তারপর পরিকল্পনা করেই আপনি কাজ শুরু করে দিলেন। এখন দেখা যাবে আপনার কাজটা কতটা এগিয়ে নিয়ে গেছেন।

নিয়ত খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি পয়েন্ট

নিয়ত এটার উপর আপনার রেজাল্ট নির্ভর করছে আপনার নিয়ত করলেন প্রতিদিন এক পারা করে কোরআন পড়বেন সে অনুযায়ী পড়া শুরু করলেন গ্যাপ দিয়ে পড়ার চাইতে শুধু তাই নয় যেকোনো কাজ প্রতিদিন নিয়মিত করলে সেটার সফলতা অনেক অনেক বেশি, একবারে অনেক কাজ করার চাইতে ধারাবাহিক ভাবে অল্প করা অনেক অনেক ভালো।

আরো পড়ুন: খালিদ বিন ওয়ালিদ কে ছিলেন প্রায় ৩০০ টি যুদ্ধে বিজয়ী

ধারাবাহিক (উদাহরণ, একটি ঘটনা উইলমারু ডলফ)

আপনার লক্ষ্য ধারাবাহিক হতে হবে একজন মেয়ের কথা আপনাদেরকে বলি তার নাম উইলমারু ডলফ যে শৈশব থেকেই ভয়ঙ্কর রোগ পোলিও রোগে আক্রান্ত ছিলেন। ডাক্তার বলল এ মেয়ে কখনো হাটতে পারবে না।

তার মা তাকে উৎসাহ দিত আর বলতো তুমি যা হতে চাও তাই হতে পারবে সে ১৩ বছর বয়সে দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নেন, সে হেরে যাই। কিন্তু সেখানে থেমে যায়নি তার ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছিলেন সেই উইলমারু ডলফ ১৯৬০ সালে দৌড় প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক পেয়েছিল।

শেষ কথা - উপসংহার

আমাদেরকে সফলতা অর্জন করতে হলে নিজেকে তৈরি করে নিতে হবে এমন ভাবে তৈরি করতে হবে যেমন ভাবে নদী কাউকে পরোয়া করে না তার নিয়মে সেই এগিয়ে যায় তার গন্তব্যে দিকে আমাদেরকে লক্ষ স্থির করে ঠিক তেমনি ভাবে এগিয়ে যেতে হবে আমরা পারব ইনশাআল্লাহ।

ধন্যবাদ-Thanks.

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
Comment মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আর আইটি ফার্মের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url