বিদেশে স্কলারশিপ পাওয়ার বিশেষ ৫ টি যোগ্যতা
আপনি কি বিদেশে স্কলারশিপ পাওয়ার যোগ্যতা গাইডলাইন সম্পর্কে তথ্য এবং যে সকল স্টুডেন্ট বিদেশে বিভিন্ন উন্নত মানের বিশ্ববিদ্যালয় স্কলারশিপ এর মাধ্যমে লেখাপড়া করছে তারা কিভাবে চান্স পেয়েছে সে সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানতে চান তাহলে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য।
(নিচের যে অংশ থেকে পড়তেছে ক্লিক করুন)
সূচিপত্র: কার্যকর বিদেশে স্কলারশিপ পাওয়ার ৫ টি যোগ্যতা
বিদেশে স্কলারশিপ পাওয়ার যোগ্যতা (ভূমিকা)
বাংলাদেশের স্টুডেন্টদের বিদেশে স্কলারশিপ এর মাধ্যমে পড়তে যাওয়ার পছন্দের পাঁচটি দেশ হলো:
- যুক্তরাষ্ট্র
- মালয়েশিয়া
- অস্ট্রেলিয়া
- জার্মানি
- কানাডা
এছাড়াও কয়েকটি দেশ রাষ্ট্রীয়ভাবেস বৃত্তি প্রদান করে থাকে হাংগেরি, চায়না, ও জাপান। বাংলাদেশ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এই দেশগুলোতে স্কলারশিপ এর জন্য ফরম ফিলাপ করা হয় এবং শিক্ষার্থী নির্বাচন করা হয়ে থাকে।
বাংলাদেশে দিন দিন স্কলারশিপ নিয়ে বিদেশে পড়তে যাওয়া আগ্রহ বৃদ্ধি পাচ্ছে কিন্তু দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের সংখ্যা খুবই কম। এর একটি বড় কারণ আবেদন প্রক্রিয়া সম্পর্কে সঠিক স্বচ্ছ গাইডলাইনের অভাব।
বিদেশে স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য একটি সঠিক গাইডলাইনের মাধ্যমে আপনিও পেয়ে যেতে পারেন কোন এজেন্সির সাহায্য ছাড়াই নিজ প্রচেষ্টায় বিদেশে স্কলারশিপ নিয়ে পড়ার সুযোগ।
বিদেশে স্কলারশিপ বা বৃত্তির খোঁজ পাব কোথায়?
আপনি যেই দেশগুলোতে স্কলারশিপের জন্য আবেদন করবেন সেই দেশগুলোর আবেদন প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে হবে। কারণ বিদেশে স্কলারশিপ পাওয়ার যোগ্যতা ও নিয়ম-কানুন একেক দেশের এক এক রকম।
প্রথমেই আপনি যেই দেশ যেই বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে স্কলারশিপ নিয়ে পড়তে চাচ্ছেন সেই দেশের বিদ্যালয়ের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটগুলো ভিজিট করে তাদের দেশে স্কলারশিপ পাওয়ার যোগ্যতা নিয়ম কানুন খুঁটিনাটি বিষয়গুলো গুলো জেনে নিন। তাহলে পরবর্তী পদক্ষেপ এবং প্রক্রিয়া গুলো সম্পন্ন করতে অনেক সহজ হবে।
বিদেশে স্কলারশিপ পাওয়ার বড় একটি তথ্য কেন্দ্র অফিসিয়াল ওয়েবসাইট
যুক্তরাজ্য https://www.gov.uk/browser/visas-immigration/student-visas
কানাডা https://ircc.canada.ca/english/information/application/student.asp
জার্মানি https://www.daad.org.uk/en/12703/index.html
ওয়েবসাইটের লিংকগুলো বিভিন্ন সময় পরিবর্তন হয়ে থাকে। তবে আপনার যখন বিদেশে স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য তথ্য জানতে চাইবেন তখন আপনাদের বেস্ট অপশন সেই দেশের শিক্ষা বোর্ড এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে ওয়েবসাইট ভিজিট করে স্কলারশিপ ও প্রাসঙ্গিক তথ্য জানা।
আপনারা অনলাইনে সার্চ করলেই বিভিন্ন দেশের শিক্ষা বোর্ডের এবং বিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটের লিংক পেয়ে যাবেন।
বিদেশে স্কলারশিপ পাওয়ার ৫ টি যোগ্যতা এবং কাগজপত্র
প্রত্যেকটা স্কলারশিপের নির্দিষ্ট সময়সীমা থাকে সেজন্য আপনাকে পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে থাকতে হবে। এবং প্রয়োজনীয় সব ডকুমেন্ট প্রস্তুত করে রাখলে নির্দিষ্ট সময়ে স্কলার্শিপের আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব হবে।
- মেয়াদ সম্পূর্ণ পাসপোর্ট
- পরীক্ষার ট্রান্সক্রিপ্ট ও সার্টিফিকেট
- ভাষাগত দক্ষতার সার্টিফিকেট
বিদেশে স্কলারশিপ পাওয়ার পাঁচটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। নিচে পয়েন্টগুলো দেওয়া হলো, বিষয়গুলো মনোযোগ সহকারে পড়বেন এবং স্টেপগুলো জেনে বুঝে প্রস্তুতি নিন।
- ভাষা দক্ষতা
- আগের পরীক্ষায় ভালো জিপিএ
- প্রকাশনা ও এক্সট্রা কারিকুলার এক্টভিটিস
- স্টেটমেন্ট অফ পারপাস
- রিকমেন্ডেশন লেটার
ভাষা দক্ষতা, আপনি যে দেশে যাবেন সে দেশের ভাষা জানা থাকলে চান্স পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। আপনার যদি রেজাল্ট একটু খারাপ থাকে তাহলে Toefl, Ielts, Pte এই পরীক্ষাগুলোতে রেজাল্ট ভালো থাকলে এটা আপনার জন্য প্লাস পয়েন্ট। ইউরোপের দেশগুলো যেমন জার্মান বা ফ্রান্স এ দেশগুলোর ভাষা জানা থাকলে আপনার বৃত্তির পাওয়ার সুযোগ রয়েছে অনেক বেশি।
আগের পরীক্ষায় ভালো জিপিএ, বিষয়টা এমন না, ক্লাসের যাদের রোল নম্বর ১ তারাই বিদেশে স্কলারশিপ পাওয়ার যোগ্যতা রাখে। আপনার যদি রেজাল্ট একটু খারাপ হয় অন্যান্য বিষয়গুলো সুন্দর করে উপস্থাপন করতে পারেন এবং আপনার মোটামুটি ভালো একটা রেজাল্ট থাকলেই আপনি স্কলারশিপে সিলেক্ট হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা বেড়ে যাবে। যেমন: ভাষার দক্ষতা, স্টেটমেন্ট অফ পারপাস, রিকমেন্ডেশন লেটার।
প্রকাশনা ও এক্সট্রা কারিকুলার এক্টভিটিস, যে সকল স্টুডেন্ট স্কলারশিপে বিদেশে গমন করার চান্স পেয়েছে তারা এই বিষয়টির উপর বেশ গুরুত্ব দিচ্ছে। পড়াশোনার পাশাপাশি গঠনমূলক কাজ করা বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুব গুরুত্বের সাথে দেখে।
সেজন্য আপনি যে বিষয়ে পড়াশোনা করার জন্য স্কলারশিপ এর মাধ্যমে বিদেশে গমন করতে চাচ্ছেন সে বিষয়ের উপর গঠনমূলক যেকোনো কাজের দিকে নজর দিন। এই কাজটি করলে আপনার স্কলারশিপ পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।
স্টেটমেন্ট অফ পারপাস, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই স্টেটমেন্ট অফ পারপাস বা একটি চিঠি লিখতে হয়। এই বিষয়ের উপর, (কেনো আমি ওই বিশ্ববিদ্যালয় লেখাপড়া করতে চাচ্ছি) স্কলারশিপ এপ্রুভ হওয়ার জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট।
অনেকেই অনলাইন থেকে বিভিন্ন ডেমো দেখে অথবা অন্য কারো চিঠি দেখে তার মত করে লিখে পাঠিয়ে দেয়। এটা করা উচিত না, কারণ এভাবে চিঠি লিখে সাবমিট করলে স্কলারশিপ পাওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। আপনারা যে বিষয়ে লেখাপড়া করার জন্য সেখানে যাচ্ছেন সে বিষয়ের উপর ভিত্তি করে নিজের অভিজ্ঞতা, দীর্ঘমেয়াদী এবং স্বল্প মেয়াদী পরিকল্পনা সুন্দর করে গুছিয়ে লিখুন।
রিকমেন্ডেশন লেটার, বিদেশে ভর্তির জন্য আগের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের রিকমেন্ডেশন লেটার প্রয়োজন হয়। আপনি যখন বিদেশে স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য আবেদন করছেন সে সময় আপনার মত আরো অনেকেই আবেদন করছে। সেজন্য শিক্ষককে সময় দিন এবং তার কাছ থেকে সুন্দর করে গুছিয়ে একটি রিকমেন্ডেশন লেটার লিখে নিন। এটা করলে বিদেশে স্কলারশিপ পাওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়ে যায়।
আশা করি আপনারা পয়েন্ট গুলো বুঝতে পেরেছেন বিদেশে স্কলারশিপ পাওয়ার যোগ্যতা এবং উপযুক্ত করলে পাঁচটি পয়েন্ট।
বিদেশে স্কলারশিপের জন্য পরিকল্পনা ও গবেষণা
ঠিক যে সময় আপনি বিদেশে স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য আবেদন করছেন ঠিক সে সময় আপনার মত আরো হাজার হাজার শিক্ষার্থী আবেদন করছে। সেজন্য নিজের সৃজনশীলতাকে কাজে লাগান এবং প্রতিটা স্টেপ সুন্দর করে ভেবেচিন্তে সাজিয়ে গুছিয়ে নিয়ে তৈরি হয়ে নিন।
আপনি যে বিষয়ে বিদেশে গমন করতে যাচ্ছেন সে বিষয়ে আপনার পূর্বে যারা বিদেশে স্কলারশিপে নির্বাচিত হয়েছে সম্ভব হলে তাদের থেকে পরামর্শ নিন। এবং সময় নিয়ে দেশ, সাবজেক্ট, বিদ্যালয়, সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে ভেবেচিন্তে গুছিয়ে পরিকল্পনা করুন।
উপসংহার - শেষ কথা
বিদেশে স্কলারশিপ পাওয়ার যোগ্যতা, আবেদনের প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে ভর্তি পর্যন্ত অত্যন্ত কষ্টকর এবং ঝামেলার কাজ। তবে ধৈর্য নিয়ে ঠিক সময়ের মধ্যে সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করলে আপনিও পেয়ে যেতে পারেন বিনামূল্যে বিদেশে পড়ার সুযোগ।
Thanks.
আর আইটি ফার্মের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url