সকল রোগ থেকে মুক্তির দোয়া - ১ টি সুরা ও শানে নুযুল

আলহামদুলিল্লাহ সমস্ত প্রশংসা সেই মহান রব্বুল আলামীনের জন্য। সুস্থতা অনেক বড় একটি নেয়ামত সেজন্য সকল রোগ থেকে মুক্তির দোয়া কোরআন থেকে আপনাদের কাছে উপস্থাপন করার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ। সকল রোগ থেকে মুক্তি দোয়া সহ আরো গুরুত্বপূর্ণ কিছু টিপস রয়েছে এই পোস্টটিতে সেই জন্য সমস্ত পোস্টটি পড়ুন।

image

কুরআনের একটি হরফ উচ্চারণ করলে দশটি সওয়াব বা নেকি পাওয়া যায়। এখন আপনারা এমন একটি পোস্ট পড়ছেন যে পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে নেকি পাচ্ছেন। (সুবহানাল্লাহ)

সূচিপত্র: সকল রোগ থেকে মুক্তির দোয়া সুরা ও শানে নুযুল

রোগ ও সমস্যা

আমরা অনেক সুস্থ আবার অনেকেই অসুস্থ তাই আমাদের সকলকে সুস্থ থাকার জন্য সকল রোগ থেকে মুক্তির দোয়া জানার প্রয়োজন। আমরা যারা সুস্থ আছি তারা হয়তো অনেকেই সুস্থতায় গুরুত্ব বুঝিনা কিন্তু যারা অসুস্থ তারাই সুস্থতার গুরুত্ব উপলব্ধি করছি।

আল্লাহ তাআলা আমাদের জন্য পরিপূর্ণ একটি গাইডলাইন দিয়েছেন আপনারা সকলেই জানেন সে বইটির নাম "আল কোরআন" এটি একটি পরিপূর্ণ জীবন জন্য গাইডলাইন। চলুন সেই সর্বশ্রেষ্ঠ আল কুরআন থেকে সকল রোগ থেকে মুক্তির দোয়া জেনে নেই।

সকল রোগ থেকে মুক্তির দোয়া, সুরা ফাতিহা ও শানে নুযুল

সকল রোগ থেকে মুক্তির দোয়া, সুরা ফাতিহা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ অল্প কিছু তথ্য জেনে নিন এই সুরায় সাতটি আয়াত, সাতটি পদ, এবং ৪১ টি বর্ণ আছে।

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَـٰنِ الرَّحِيمِ

যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহ তা’আলার যিনি সকল সৃষ্টি জগতের পালনকর্তা। الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ
যিনি নিতান্ত মেহেরবান ও দয়ালু। الرَّحْمَـٰنِ الرَّحِيمِ
যিনি বিচার দিনের মালিক। مَالِكِ يَوْمِ الدِّينِ
আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করি এবং শুধুমাত্র তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি। إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ
আমাদেরকে সরল পথ দেখাও, اهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ
সে সমস্ত লোকের পথ, যাদেরকে তুমি নেয়ামত দান করেছ। তাদের পথ নয়, যাদের প্রতি তোমার গজব নাযিল হয়েছে এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে। صِرَاطَ الَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّالِّينَ

শানে নুযুল (অবতরণের প্রেক্ষাপট: এই সূরা মক্কা মুকাররমাহ কিংবা মদিনা মুনাওয়ারাহয় অথবা উভয় পূর্ণময়ী ভূমিতে অবতীর্ণ হয়েছে। হযরত আমর ইবনে শোরাহবীল থেকে বর্ণিত, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত খাদীজা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুকে বললেন, "আমি এক আহ্বান শুনে থাকি, যাতে اقرأ 'ইক্বরা' (আপনি পড়ুন!) বলা হয়।"

ওয়ারক্বাহ ইবনে নওফলকে এ সম্পর্কে অবহিত করা হলো। তিনি আরজ করলে, "যখন এই আহবান আসে তখন আপনি স্থিরচিত্রে তার শ্রবন করুন।" এরপর হযরত জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) হুযুর সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে হাজির হয়ে আরজ করলেন, আপনি বলুন,

(بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَـٰنِ الرَّحِيمِ) "বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম, আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল 'আলামিন।" এ থেকে বোঝা যায় যে, অবতরণের দিক দিয়ে এটাই প্রথম সূরা। কিন্তু অন্যান্য বর্ণনা থেকে জানা যায় যে, সর্বপ্রথম "সূরা ইক্বরা" নাযিল হয়েছে। দো'আ বা প্রার্থনার তরীক্বা শিক্ষা দেয়ার জন্য এ সূরার বর্ণনাভঙ্গি বান্দাদের ভাষায়ই এরশাদ হয়েছে।

সূরা ফাতিহার ফজিলত সমূহঃ সকল রোগ থেকে মুক্তির দোয়া

হাদিসসমূহে এ সূরার বহু ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। হুযুর সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, "তাওরীত, ইনজীল ও যাবুরে এর মত কোন সূরা নাযিল হয়নি" (তিরমিজি শরীফ)

এক ফেরেস্তা আসমা থেকে অবতীর্ণ হয়ে হুযুর সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর সালাম আরয করলেন এবং দুটি 'নূর' এর সুসংবাদ দিলেন, যা হুযুরের পূর্বে কোন নবীকে প্রদান করা হয়নি। এটা হচ্ছে 'সূরা ফাতিহা', অন্যটা সূরা বাক্বারা'র শেষ আয়াত সমূহ। (মুসলিম শরীফ)

সূরা ফাতিহা ১০০ বার পাঠ করে যে প্রার্থনাই করা হোক, আল্লাহ তায়ালা কবুল করেন। (দারমী শরীফ)

সকল রোগ থেকে মুক্তির দোয়া, সূরা বনী ইসরাঈল

সূরা বনী ইসরাঈল ১০৫ নং আয়াত

শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু। بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَـٰنِ الرَّحِيمِ
আমি সত্যসহ এ কুরআন নাযিল করেছি এবং সত্যসহ এটা নাযিল হয়েছে। আমি তো তোমাকে শুধু সুসংবাদাতা ও সতর্ককারী হিসেবে প্রেরণ করেছি। وَبِالْحَقِّ أَنزَلْنَاهُ وَبِالْحَقِّ نَزَلَ وَمَا أَرْسَلْنَاكَ إِلاَّ مُبَشِّرًا وَنَذِيرً

আয়াত শরীফের চিহ্নিত অংশটুকু প্রত্যেক রোগ থেকে আরোগ্য লাভের জন্য এক পরীক্ষিত 'আমল'। রোগস্থলের উপর হাত রেখে এটা পাঠ করে যদি ফুঁম দেওয়া হয় তাহলে আল্লাহর নির্দেশক্রমে, রোগ দূরীভূত হয়ে যায়।

মোহাম্মদ ইবনে সাম্মাক অসুস্থ হয়ে পড়লেন। তখন তার ভক্তবৃন্দ বোতল নিয়ে একজন খ্রিস্টান চিকিৎসকের নিকট চিকিৎসার উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে একজন লোকের দেখা হলো। লোকটা অতীব হাসি মুখ ও মনোরম পোশাক পরিহিত ছিলেন।

তার শরীর মোবারক থেকে অতি পবিত্র খুশবু আসছিল। তিনি বললেন, "কোথায় যাচ্ছেন?" তারা বললেন, "ইবনে সাম্মাকের (প্রস্রাবের) বোতল দেখানোর জন্য অমুখ চিকিৎসকের নিকট যাচ্ছি" তিনি বললেন, "আল্লাহরই পবিত্রতা! আল্লাহর ওহীর জন্য আল্লাহর শত্রুর নিকট সাহায্য চাচ্ছেন? বোতলটা ফেলে দিন! ফিরে যান।

আর তাকে বলুন! ব্যথা স্থলে হাত রেখে পড়ুন, وَبِالْحَقِّ أَنزَلْنَاهُ وَبِالْحَقِّ ( 'ওয়া বিল হাক্বক্বি আনযালনাহু ওয়া বিল হাক্বক্বি নাযালা') এ কথা বলে উক্ত বুযর্গ অদৃশ্য হয়ে গেলেন।

ওই ভক্তবৃন্দ ফিরে গিয়ে ইবনে সাম্মাককে ঘটনা বললেন। তিনি ব্যথার স্থানে হাত রেখে ওই কালেমাটা পাঠ করলেন। তৎক্ষণাৎ আরোগ্য লাভ করলেন।

অতঃপর ইবনে সাম্মাক বললেন, " তিনি ছিলেন হযরত খিজির। (আলা নবীয়িনা ওয়া আলায়হিস সালাম)।

শেষ কথা

আলহামদুলিল্লাহ, সকল রোগ থেকে মুক্তির দোয়া যতটুকু উপস্থাপন করেছি তা সম্পন্ন কুরআনের আয়াত, শানে নুযুল এবং হাদিস থেকে। আল্লাহ চাইলে সবকিছুই কিছুই সম্ভব আর তিনি না চাইলে কোনোভাবে সেটা সম্ভব না। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে বিভিন্নভাবে পরীক্ষা নেই সেজন্য ধৈর্য ধরুন আল্লাহর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করুন এবং আপনার অসুস্থতার জন্য আল্লাহর কাছে সাহায্য চাই অবশ্যই তিনি মুমিনদের সাথে রয়েছ (আল-কোরআন)।

আল্লাহর কাছে সেই ব্যক্তি প্রিয় যে নিজের জন্য যেটা পছন্দ করে অন্যের জন্যও সেটা পছন্দ করে। তাই কোরআনের এই আয়াতগুলো সকল রোগ থেকে মুক্তির জন্য শেয়ার করুন আপনার ফেসবুকে এবং অন্যান্য ওয়েবসাইটে। আপনার পরিচিতদের মাঝে ছড়িয়ে দিন এবং আল্লাহ আল্লাহর রাসূলের প্রেম পড়ে জীবনটাকে সার্থক করতে চায়।

ধন্যবাদ-Thanks

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
Comment মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আর আইটি ফার্মের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url