ফেসবুকে কত ভিউ কত টাকা - ভিউ বাড়ানোর ১২টি উপায়
ফেসবুকে কত ভিউ কত টাকা? এবং ভিউ বাড়ানোর উপায় নিয়ে আমাদের কৌতূহলের শেষ নেই। কেননা বর্তমানে টাকা ইনকামের জন্য ফেইসবুক খুবই জনপ্রিয় একটি প্লাটফর্ম। আজকের আর্টিকেলটি সাজিয়েছি ফেসবুক কে কেন্দ্র করে।
এই আর্টিকেলটি পড়লে আপনি জানতে পারবেন ফেসবুক কি, ভিউ কি, ফেসবুকে কত ভিউ কত টাকা, ফেসবুকে আয় করার উপায়, ভিউ বাড়ানোর উপায় সহ ফেসবুক কে কেন্দ্র করে আরো অনেক কিছু। তাই আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
সূচিপত্র: ফেসবুকে কত ভিউ কত টাকা - ভিউ বাড়ানোর ১২টি উপায়
(নিচের যে অংশ থেকে পড়তে চান ক্লিক করুন)
- ফেসবুক কি?
- ফেসবুকের ভিউ কি?
- ফেসবুকে কত ভিউ কত টাকা?
- ১০০০০ ভিউতে ফেসবুক কত টাকা দেয়
- ১ মিলিয়ন ভিউতে ফেসবুক কত টাকা দেয়
- ফেসবুক থেকে আয় করার উপায়
- ফেসবুক ভিডিও কনটেন্টে ভিউ বাড়ানোর উপায়
- উপসংহার - শেষ কথা
এটা এখন শুধু মানুষের যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে নয় বরং টাকা ইনকামের পথও উন্মোচন করেছে। ফেসবুকে আমরা বিভিন্ন ধরনের কনটেন্ট যেমন: ছবি, ভিডিও, রিলস ইত্যাদি দিয়ে থাকি এবং অনেক সময় চিন্তা করি এগুলো থেকে কিভাবে টাকা ইনকাম করা যায় ইত্যাদি। ফেসবুকে ভিউ সংখ্যা যদি বাড়ে তাহলে টাকার পরিমাণও বাড়বে।
ফেসবুক কি, প্রতিষ্ঠা ও প্রোগ্রামিং ভাষা?
ফেসবুকে কত ভিউ কত টাকা এ আর্টিকেলে আমরা প্রথমে জানবো ফেসবুক কি? ফেসবুকে একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। এর দ্বারা আমরা আমাদের লেখা, ছবি, ভিডিও, রিলস ইত্যাদি সকলের মাঝে শেয়ার করতে পারি।
জনপ্রিয় এই সাইটটি ২০০৪ সালে ৪ ফেব্রুয়ারি মার্ক জুকারবার্গ প্রতিষ্ঠা করেন। এর প্রোগ্রামিং ভাষাগুলো হল : C++, PHP ইত্যাদি। ইউকিপিডিয়া থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, ফেসবুকের ধারক কম্পানি হল মেটা প্ল্যাটফর্মস যা পূর্বে ছিল ফেসবুক,ইনক.।
ফেসবুক অনেক বড় একটা প্ল্যাটফরম। এর অধীনস্থ আরো বেশ কয়েকটি কোম্পানি রয়েছে। যথা: ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুক মেসেঞ্জার, হোয়াটস অ্যাপ, ওকুলাস ভিআর ইত্যাদি। ফেসবুকের ওয়েবসাইট হল facebook.com
ফেসবুক ভিউ কি? ছবি, ভিডিও, স্টোরি।
ভিউ সংখ্যা দ্বারা আপনি আপনার নিজের কনটেন্টের কোয়ালিটি যাচাই করতে পারবেন। আপনার কনটেন্টটি মানুষ কিভাবে গ্রহণ করেছে সেটি বুঝতে পারবেন। সব কন্টেন্টের জন্য ফেসবুক ভিউ একইভাবে কাউন্ট করা হয় না। ভিউ কাউন্টের মধ্যেও কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। চলুন পার্থক্যগুলো দেখে আসা যাক-
- ছবি বা কিছু লিখে পোস্ট করা: আপনি যদি ছবি বা কিছু লিখে পোস্ট করেন তখন সেই পোস্টটি কতজন ব্যক্তি দেখেছে সেটা হবে সেই পোষ্টের ভিউ।
- ভিডিও পোস্ট করা: আপনার পোস্ট করা ভিডিওটি অন্য ফেসবুক ব্যবহারকারীকে সর্বনিম্ন ৩ সেকেন্ড দেখতেই হবে। যদি ৩ সেকেন্ডের কম হয় তবে তা ভিউ হিসেবে কাউন্ট হবে না। তাই কোন ফেসবুক ব্যবহারকারী সর্বনিম্ন তিন সেকেন্ড ভিডিও দেখলে তা এক ভিউ হিসেবে কাউন্ট হবে। এভাবে একজন ব্যবহারকারী যতবার ভিডিও দেখবেন তার ভিউ সেই পরিমাণ হবে।
- স্টোরি দেয়া: স্টোরি সম্পূর্ণ বা অংশবিশেষ দেখার উপর ভিউ কাউন্ট হয়।
ফেসবুকে কত ভিউ কত টাকা?
ফেসবুকে কন্টেন্টের ভিউ বাড়ার ক্ষেত্রে এবং ইনকামের ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি বিষয় দেখা যায়। যেমন: কন্টেন্টের ধরন কেমন, মান কেমন, বিজ্ঞাপন টি কেমন, যারা ভিউয়ার্স অর্থাৎ কন্টেন্টটি দেখছেন তারা কোন অবস্থানে রয়েছে, ফেসবুকের নিজস্ব কিছু নীতিমালা ইত্যাদি।
এখানে ভিউয়ার্সদের অবস্থানের উপর বেশি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে কারণ টাকা প্রদানের পরিমাণের ক্ষেত্রে দেশের ভেতরের ভিউ এবং দেশের বাহিরের ভিউ এর মধ্যে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে।
CPM, CPC ও CTR এগুলো সম্পর্কে আমাদের পরিষ্কার ধারনা থাকতে হবে। কেননা এই তিনটি কনসেপ্ট সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা না থাকলে ফেসবুকে কত ভিউ কত টাকা তা জানা যাবে না।
- CPM: CPM এর মিনিং হলো Cost Per Impression. যখন কোন ভিডিও কনটেন্ট এর উপর প্রতি ১০০০ ভিউয়ের জন্য বিজ্ঞাপন দাতারা যে পরিমাণ অর্থ দেয় সেটাই সিপিএম।
- CPC: CPC এর মিনিং হলো Cost Per Click. বিজ্ঞাপনে ভিউয়ার্সদের ক্লিক করার উপর নির্ভর করে যে টাকা পাওয়া যায় তা বোঝার উপায় হচ্ছে CPC.
- CTR: CTR এর মিনিং হলো Click Through Rate. বিজ্ঞাপনে ক্লিকের সংখ্যা বোঝা যায় CTR এর মাধ্যমে।
যদি আপনি ১০০০ ভিউ চান তাহলে সিপিএম থাকতে হবে $1:$1, আপনার কনটেন্টে যদি ১০ জন ক্লিক করে তাহলে CPC হবে $0.1:$0.1, আর যদি ভিউয়ারস সংখ্যা হয় ১০০ এবং সেখান থেকে সবাই ক্লিক না করে মাত্র ১০ জন ক্লিক করে তাহলে CTR হবে 10%:$0.1
১০০০০ ভিউতে ফেসবুক কত টাকা দেয়?
১০০০০ ভিউতে ফেসবুক কত টাকা দেয়? যদি কোন কনটেন্ট ক্রিয়েটরের কনটেন্টে ১০ হাজার ভিউ থাকে তাহলে ফেসবুকের নীতি অনুযায়ী ৪৮ ডলার থেকে ২০০ ডলার পর্যন্ত ইনকাম করা সম্ভব।
এটা আনুমানিক একটা ধারণা মাত্র একদম এই পরিমাণই ইনকাম করা যাবে বা টাকা দিবে তা নির্দিষ্ট করে বলা যায় না।
কেননা আমরা পূর্বেই জেনেছি কনটেন্টের মান, ভিউয়ার্সদের অবস্থান ইত্যাদি আরো অনেক কিছুর উপর নির্ভর করে যে কত টাকা পাওয়া যাবে।
১ মিলিয়ন ভিউতে ফেসবুক কত টাকা দেয়?
ভিউয়ের পরিমাণ যদি ১ মিলিয়ন হয় তাহলে তো কথাই নেই। কেননা ১ মিলিয়ন একটি বড় সংখ্যা। ১ মিলিয়ন বা তার বেশি সংখ্যক ভিউতে ফেসবুক একটা ভালো এমাউন্ট দিবে বলে আশা করা যায়।
কারণ মিলিয়নের উপরে ভিউ মানে এটি অবশ্যই একটি ভাইরাল ভিডিও যা অন্যান্য ভিডিও থেকেও বেশি টাকা পাওয়া যাবে।
তবে কত টাকা পাওয়া যাবে তা নির্দিষ্ট করে বলা যায় না। আনুমানিক বলা যায়, এক মিলিয়ন ভিউ হলে বা তার বেশি হলে ১০০০ ডলার থেকে ১০০০০ ডলারও আয় করা সম্ভব।
ফেসবুক থেকে আয় করার উপায়?
এ আর্টিকেলে ফেসবুক থেকে আয় করার বিভিন্ন উপায় গুলো সম্পর্কে এখন আমরা জানবো। ফেসবুক থেকে আয় করার বিভিন্ন উপায় গুলো হলো :
- ফেসবুক মনিটাইজেশন
- ইনস্ট্রিম এড
- রিয়েলসে অ্যাড
- ফ্যান্স সাবস্ক্রিপশন
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
- ব্র্যান্ড কোলাবরেশন/প্রমোশন
- সরাসরি ফলোয়ারদের কাছ থেকে অর্থ আয়
- ফলোয়ারদের আপনার অনলাইন স্টোরে নিয়ে যান
- অনলাইনে পেইড ইভেন্ট
- অনলাইন কোচিং
ফেসবুকে ভিডিও কন্টেন্টের ভিউ বাড়ানোর উপায়
আপনি যদি ফেসবুক ভিডিও কনটেন্ট এর ভিউ বাড়াতে চান তাহলে নিন্মুক্ত স্ট্রাটেজিগুলো অনুসরণ করলে ভালো ফলাফল পেতে পারেন:
- মানসম্মত কনটেন্ট
- ক্যাপশন দেয়া
- শিরোনাম
- নতুনত্ব
- কনটেন্ট পোষ্টের সময়
- অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া
- থাম্বনেইল
- ফেসবুক লাইভ
- জনপ্রিয়তা
- পারস্পরিক যোগাযোগ
- লাইটিং
আরো পড়ুন: বাংলাদেশে টাকা আয় করার apps প্রতিদিন ২৫০-৫০০+ টাকা
১. মানসম্মত কনটেন্ট: আপনি যদি ফেসবুকে ভিডিও কনটেন্টের ভিউ বাড়িয়ে আয়ের পথ নিশ্চিত করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে মানসম্মত ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করতে হবে। ভিডিওটি যাতে সর্বজন গ্রহণযোগ্য হয় এবং এর অডিও সিস্টেম যাতে ক্লিয়ার থাকে ও ভালো হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
২. ক্যাপশন দেয়া: ভিডিওতে অবশ্যই ক্যাপশন লিখে তারপর তা পোস্ট করতে হবে। কেননা এতে করে ভিডিওর সাউন্ড অন বা অফ থাকলেও কোন সমস্যা হবে না। কোন মিথ্যা ক্যাপশন যাতে ব্যবহৃত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
৩. শিরোনাম: যেকোনো কিছুর শিরোনাম সুন্দর ও আকর্ষণীয় হলে তা সহজেই মানুষের দৃষ্টিগোচর হয়। কন্টেন্টের ক্ষেত্রেও তাই। এজন্য কনটেন্টের শিরোনাম খুবই আকর্ষণীয় ভাবে উপস্থাপন করতে হবে।
৪. নতুনত্ব: মানুষ নতুনত্বকে প্রাধান্য দেয়। কোন কনটেন্টে যদি অনেক তথ্য থাকে এবং তথ্যে নতুনত্ব থাকে তাহলে সে কনটেন্টের প্রতি মানুষের গ্রহণ যোগ্যতা বেশি থাকে।
৫. কনটেন্ট পোষ্টের সময়: সব সময় ফলোয়ার্সরা ফেসবুকে একটিভ থাকেনা। কনটেন্ট পোস্ট করার সময় খেয়াল রাখতে হবে তারা একটিভ আছে কিনা।
৭. অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া: ভিডিওতে ভিউ বাড়ানোর অন্যতম একটি উপায় হচ্ছে শুধু ফেসবুকের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থাকা। ফেসবুকের বাহিরে অন্যান্য যি সোশ্যাল মিডিয়া আছে সেগুলোতে কনটেন্ট শেয়ার করতে হবে।
৮. থাম্বনেইল: ভিডিওতে এমন থাম্বনেইল রাখতে হবে যাতে ভিডিও সামনে পড়লে ফলোয়ার্সরা বা কেউ এড়িয়ে যেতে না পারে।
৯. ফেসবুক লাই: অন্যান্য ভিডিও এর তুলনায় ফেসবুক লাইভ ভিডিও করলে বেশি ভিউ পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
১০. জনপ্রিয়তা: কনটেন্টের ভিউ বাড়ানোর জন্য এমন কনটেন্ট আপনাকে বেছে নিতে হবে যা সমসাময়িক হালের সাথে দিন দিন জনপ্রিয়তা বাড়ছে। এই ধরনের কনটেন্ট সহজেই দর্শকদের নজর কাড়ে।
১১. পারস্পরিক যোগাযোগ: আপনার কনটেন্টের ভিউ বাড়ানোর জন্য ফলোয়ার্স বা দর্শকদের সাথে আপনার পারস্পরিক যোগাযোগ বাড়াতে হবে। তাদের মতামতকে গুরুত্ব দিতে হবে।
১২. লাইটিং: কোন ভিডিও কন্টেন্ট তৈরি করতে গেলে অবশ্যই লাইটিং এর উপর জোর দিতে হবে কেননা ভিডিওর বিষয়বস্তু মানসম্মত হলেও তা দেখতে ক্লিয়ার না হলে ফলোয়ার্সরা তা এড়িয়ে যেতে পারে। এজন্য পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করে মানসম্মত ভিডিও তৈরি করলে সহজেই ভিউ বাড়বে।
উপসংহার - শেষ কথা
পরিবেশে বলা যায় যে, এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা জানতে পেরেছেন ফেসবুকের বিভিন্ন বিষয় সহ ফেসবুকে টাকা আয়ের অনেকগুলো পন্থা সম্পর্কে। সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশি সময় ব্যয় করা সব সময় নেগেটিভ কিছু নয়, এর সঠিক ব্যবহার একজন সাধারন মানুষের জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে।
তার উন্নত ক্যারিয়ার এখানে বিল্ড আপ হতে পারে। তাই আমরা সবাই সোশ্যাল মিডিয়ার নেগেটিভ দিকটি পরিহার করে অবশ্যই পজিটিভ দিকগুলো গ্রহণ করব। আশা করি, ফেসবুকে কত ভিউ কত টাকা? ভিউ বাড়ানোর ১২টি উপায় নিয়ে লেখা আর্টিকেলটি আপনাদের বেশ কাজে দিবে। (1219)
Thanks.
আর আইটি ফার্মের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url